হোসেনপুরে বিলুপ্তির পথে ময়না পাখি।

হোসেনপুরে বিলুপ্তির পথে ময়না পাখি।
মাহফুজ রাজা,জেলা প্রতিনিধি,কিশোরগঞ্জ ;
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে  কৃত্রিমতার উৎপাতের কারণে বিপন্ন হচ্ছে  ময়না পাখি।  এই পাখি দ্রুত পোষ মানার কারণে সবচেয়ে বেশি শিকার হয়। এছাড়াও প্রাকৃতিক বন নষ্ট এবং পাখিদের আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার কারণে দিন দিন বিলুপ্তির পথে  ময়না। বর্তমানে গভীর জঙ্গল  ছাড়া এদের দেখা মেলে না। শিকারিরা জানান, এখন একটি পাখি শিকার করতে প্রচুর সময় লাগে। বর্তমানে এদের বনে সচরাচর দেখা যায় না। তবে এই পাখির চাহিদা এখন কম বলে  জানান, শিকারিরা। মূলত মানুষের কারণেই   ময়না সবচেয়ে বেশি হুমকির মুখে পড়েছে।
ময়না একটা শান্তি প্রিয় পাখি, যুগযুগ ধরে মানুষ ময়না পাখি পোষে, বিভিন্ন গীতি কবিগন ময়নাকে ভালোবেসে লিখেছেন গান বা কবিতার ছন্দ অসংখ্য আধ্যাতিক লেখকরা মানুষের রুহ্ টাকে ময়না পাখি বলেও সম্বোধন করেছেন, আবার বহু বিরহ কবিরা তাদের গানে প্রিয়জনকে ময়না বলে মূল্যায়ন করেছেন। এটা মূলত ময়না পাখিকে আদর আহ্লাদের বহিঃপ্রকাশ।
উপজেলার সাবেক শিকারিদের জৈনেকের সাথে কথা বলে জানা যায়, একটা সময় ময়নার চরম কদর ছিল,একটা ময়না ২০০০-৩০০০ টাকা বিক্রি করা যেতো  ময়না প্রেমিদের কাছে, তারা ময়না কিনে নিতো গৃহে পোষ মানাতে লালন পালন করতেন।বর্তমানে মানুষজন ব্যস্ত দুনিয়ায় ময়না পোষে না তেমন।তাছাড়াও আগের মত ময়না বন-জঙ্গলে মিলেনা।
সরেজমিনে দেখা যায়, সিদলা ইউনিয়নের সাহেবের চর গ্রামে ময়না পোষছেন অনিক, মানুষের মতোই কথা বলতে শুনা যায়,অনিক বাড়িতে আছে কিনা কেউ জানতে চাইলে, ময়না বাড়িতে না থাকার কথা
মধুর সুরে বলেন,আবার কেউ বাড়িতে প্রবেশ করলে
মেহমান বলে আখ্যায়িত করে তার ময়না।মূলতঃ পরিবেশের সাথে থেকে সামাজিকতা শিখে নিয়েছেন অনিকের ময়না।
জানা যায়,অবাধে মানুষ বিভিন্ন স্থাপত্য কিংবা বসত ভিটা তৈরির লক্ষ্যে বন-জঙ্গল বা বৃহৎ বৃক্ষরাজী কেটে ফেলায় ময়না পাখি অযত্নে অবহেলায় বিলুপ্তির পথে।
সিদলা ইউনিয়নের সুরাটি গ্রামের জুনায়েদ জানান,
ময়না সাধারণত বড় বৃক্ষের গর্তে বাসা বাঁধে,গত কয়েক বছর পূর্বেও গাছের ডালে,বাসা বাড়ির ছাদে(চালে) বিভিন্ন গাছের গর্তে,  ময়না দেখা যেতো এখন আর তেমন ময়না পাখি কোথাও দেখা যায় না।
সাহেবের চর গ্রামের লাল মিয়া জানান,ব্রম্মপুত্র নদের পাড়ে শুকনো মৌসুমে ময়নার গর্ত দেখা যেতো।
 ময়নার গায়ের পালক উজ্জ্বল কালো। রোদের আলোয় কালো রং চকচক করে। তার ওপর কিছুটা সবুজ ও বেগুনি আভা। ময়নার মাথার পেছনের হলুদ আবরণে ডাকা ত্বক। এই যেন রূপসীর গয়না বা কণ্ঠহার। বাসন্তি রঙের ঠোঁট। ডানার বড় পালকের আড়ালে কয়েকটি সাদা পট্টি থাকে। ময়নার পা ধবধবে হলুদ। এরা সাধারণত বৃক্ষের উঁচু উঁচু ডালে থাকতে পছন্দ করে। লম্বায় দশ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়।

আপনি আরও পড়তে পারেন